মো: মামুনুর রশিদ, আমতলী(বরগুনা)প্রতিনিধিঃ মো. মামুনুর রশিদ, আমতলী (বরগুনা): বরগুনার আমতলীতে নির্যাতনের পর স্ত্রী জুবায়রা আক্তার জান্নাতিকে (১৭) হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ইমন সরদারের বিরুদ্ধে। নিহতের বাবা, সাংবাদিক সুমন রশিদ, অভিযোগ করেছেন যে, ইমন নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনা আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেছে। ঘটনার পর ইমন মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়।
শুক্রবার রাতে আমতলী পৌরসভার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, এক বছর আগে গোপনে বিয়ে করেছিলেন নাচনাপাড়া গ্রামের আল আমিন সরদারের ছেলে ইমন সরদার এবং সাংবাদিক সুমন রশিদের মেয়ে জান্নাতি। বিয়ের পর থেকে ইমন জান্নাতির ওপর যৌতুকসহ নানা কারণে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের বাবা।
শুক্রবার বিকেলে দাম্পত্য কলহের জেরে ইমন জান্নাতির মাথার চুল কেটে দেয়। এর প্রতিবাদ করলে ইমন তাকে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে জান্নাতি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে, ইমন তাকে মৃত ভেবে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজায়। পরে মরদেহ আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জান্নাতির মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মো. আমির হোসেন সেরনিয়াবাদ বলেন, “মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।”
জান্নাতির বাবা সুমন রশিদ বলেন, “আমার মেয়ে বিয়ের পর থেকেই জামাই ইমনের নির্যাতনের শিকার ছিল। শুক্রবার আমার মেয়ের মাথার চুল কেটে দেওয়ার পর তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।”
আরও পড়ুনঃ বুটেক্সে প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ভর্তি পরীক্ষা ৭মার্চ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, ইমন প্রায়ই জান্নাতিকে মারধর করত। শুক্রবার বিকেলের ঘটনার পরও ইমন তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
ইমন সরদার তার স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “দাম্পত্য কলহের জেরে আমি তার মাথার চুল কেটে দিয়েছিলাম। একপর্যায়ে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।”
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান খান বলেন, “হাসপাতালে আনার আগেই জান্নাতির মৃত্যু হয়েছিল।”
স্থানীয়দের মধ্যে এ ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।