
আব্বাস উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে টানা ৪০ ঘণ্টা ধরে ভোগান্তিতে পড়েছেন সহস্রাধিক গ্রাহক। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত ১২টার পর থেকে শুরু হওয়া এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট শনিবার বিকেল পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হলো নাথপাড়া, কলেজপাড়া, সূত্রধরপাড়া, দত্তপাড়া এবং ঘোষপাড়া। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ (পিডিবি) সমস্যার বিষয়ে জানার পরও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি, যার ফলে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েন।
বিদ্যুৎ না থাকায় অনেকেই শীতের রাতগুলোতে লেপ-তোষক গরম রাখতে মোমবাতির সাহায্য নিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। মোমবাতির আগুনে একাধিক পরিবারের লেপ, তোষক এবং কম্বল পুড়ে যায়। অন্যদিকে ফ্রিজে রাখা কাঁচা তরি-তরকারি, মাছ-মাংস পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
সরাইল সরকারি কলেজের প্রভাষক মৃধা আহমাদুল কামাল পিডিবির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধানের জন্য অনুরোধ করেন। তবে নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আহমেদের আশ্বাসের পরও যথাসময়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শনিবার সকালে পিডিবি জানায়, ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এরপর বিকাল ৩টার দিকে নতুন ট্রান্সফরমার নিয়ে পিডিবির একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে এর আগে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিছু লোক ট্রান্সফরমার মেরামতের জন্য টাকা উত্তোলনের অভিযোগও করেছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুনঃ বীরগঞ্জে এলাইগাঁও বিষ্ণু মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “প্রথম দিন যদি পিডিবি সরাসরি ঘটনাস্থলে এসে ব্যবস্থা নিত, তাহলে এত বড় ক্ষতি হতো না। তবে তারা শুধু বলেছে ‘দেখছি’, আর আমরা ৪০ ঘণ্টা ধরে এই ভোগান্তি সহ্য করেছি।”
সরাইল পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, “ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গিয়েছিল, যা দ্রুত মেরামত করার চেষ্টা করা হয়েছে। শুক্রবার সারাদিন টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে কাজ করা যায়নি। শনিবার বিকেলে নতুন ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে, এবং গ্রাহকরা বিদ্যুৎ পেয়েছেন।”
স্থানীয়রা বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও জরুরি মেরামত কার্যক্রমে দ্রুততার দাবি জানিয়েছেন। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে সৃষ্ট ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও দাবি জানানো হয়েছে।