spot_img

― Advertisement ―

spot_img

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর নেতৃত্বে ন্যাশনস লিগ শিরোপা পর্তুগালের হাতে

স্পোর্টস ডেস্ক: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে যুক্ত হলো আরও একটি গৌরবময় অধ্যায়। ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চ উয়েফা ন্যাশনস লিগে স্পেনকে রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনালে হারিয়ে শিরোপা...
প্রচ্ছদসারা বাংলা১৯ বছর ধরে স্ত্রীর কবরের পাশে স্বামী এটিএম মোস্তফার অটুট ভালোবাসা

১৯ বছর ধরে স্ত্রীর কবরের পাশে স্বামী এটিএম মোস্তফার অটুট ভালোবাসা

রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ প্রেম কি কেবল গল্প-উপন্যাসের বিষয়? নাকি বাস্তবেও এমন প্রেমিক রয়েছেন, যিনি ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন? এমনই এক প্রেমের উদাহরণ দেখা গেছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে, যেখানে প্রিয়তমা স্ত্রীর কবরের পাশেই ১৯ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন এক নিবেদিতপ্রাণ স্বামী, সাবেক শিক্ষক এটিএম মোস্তফা।

উপজেলা সদরের চাঁন্দামারী গ্রামের বাসিন্দা এটিএম মোস্তফা রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৬ সালের ১৪ নভেম্বর মাত্র ৪৩ বছর বয়সে তার স্ত্রী রেখা বেগম মারা যান। স্ত্রীকে বাড়ির প্রবেশপথের পাশেই দাফন করা হয়, আর সেই থেকে তিনি স্ত্রীর কবরকে দৃষ্টিসীমার বাইরে রাখতে চান না।

এটিএম মোস্তফা ও তার স্ত্রী রেখা বেগমের দাম্পত্য জীবন ছিল অপার ভালোবাসায় ভরা। বিয়ের পর তারা কখনো একে অপরকে ছেড়ে এক রাতও কাটাননি। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি যেন সেই অভ্যাসটাই ধরে রেখেছেন—তার কবরের পাশেই থাকছেন প্রতিনিয়ত।

পরিবারের সদস্যরা জানান, মোস্তফা স্যার কোথাও যেতে চান না, জরুরি প্রয়োজনে বের হলেও দ্রুত ফিরে আসেন। কবরের পাশে বসে দোয়া করেন, রাতভর নামাজ পড়ে কোরআন তেলাওয়াত করেন। তার ছেলে রাজীব ফেরদৌস শুভ্র বলেন, “মা মারা যাওয়ার ১৯ বছর হলো, কিন্তু বাবা তাকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারেননি। আমরা তাকে বুঝিয়েছি, নতুনভাবে জীবন শুরু করতে বলেছি, কিন্তু তিনি মাকে ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারেন না।”

নিজের এই একনিষ্ঠ ভালোবাসার বিষয়ে এটিএম মোস্তফা বলেন, “মানুষটা চলে গেছে বহু দিন হলো, কিন্তু ভালোবাসা তো চলে যায়নি। তার মৃত্যুর পর জীবনটা বড় শূন্য হয়ে গেছে। আমি তাকে ভুলতে পারি না। তার জন্য আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা করি। এ পর্যন্ত ৯৫ বার কোরআন খতম করেছি, যেন সে শান্তি পায়।”

আরও পড়ুনঃ সরকারি গোডাউন থেকে ১৭ হাজার ৫৩৩ বই উধাও: তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য

তিনি আরও বলেন, “আমার জীবনের বাকি সময়টুকুও আমি এভাবেই কাটিয়ে দিতে চাই, তার কবরের পাশেই।”

এলাকাবাসী এটিএম মোস্তফার এই ভালোবাসাকে অবাক বিস্ময়ে দেখছেন। উপজেলার নওদাবস উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোবাশ্বের আলম লিটন বলেন, “মোস্তফা স্যার সম্রাট শাহজাহানের মতো স্ত্রীর জন্য তাজমহল নির্মাণ করেননি, কিন্তু তার প্রতি যে ভালোবাসার নিদর্শন রেখেছেন, তা তাজমহলের চেয়েও কম নয়।”

প্রেম যখন নিছক কল্পনা বলে ধরে নেওয়া হয়, তখন এটিএম মোস্তফার মতো মানুষরা প্রমাণ করেন—সত্যিকারের ভালোবাসা এখনো টিকে আছে, কিছু মানুষের হৃদয়ে।