
আজ ৫ই জুন (বুধবার) বিশ্ব পরিবেশ দিবস। প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক কর্মোদ্যোগ আর জনসচেতনতার মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে পালিত দিবস। এই দিনটিতেই জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ সম্মেলন (United Nations Conference on the Human Environment) শুরু হয়েছিল। এই সম্মেলন হয়েছিল ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ থেকে ১৬ জুন অবধি।তখন থেকেই প্রতি বছর এই দিবস পালিত হয়ে আসছে।
আমরা সকলেই বিভিন্ন পরিবেশে বসবাস করি কিন্তু মানুষের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুন্দর একটি পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু সুন্দর পরিবেশ আমরা আর পাচ্ছি ই বা কোথায়? করছি শুধু পরিবেশ দূষণ। এই পরিবেশ দূষণ বছরে প্রায় ৯০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটাচ্ছে। অথচ গুরুতর এই বিষয়টি বেশির ভাগ সময় আমরা এড়িয়ে যাই। পরিবেশ দূষণের কারণে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে,উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে।
এছাড়াও প্রতিনিয়ত নগরায়নের ফলে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, গাছপালা নির্বিচারে কাটা হচ্ছে। বাইরে বের হলেই ডাস্টবিন থেকে বিভিন্ন বস্তুর দুর্গন্ধে নাক – মুখ বন্ধ রাখতে হয়। এই সকল দূষণ আমরাই তো করছি এবং আমরা নিজেরা যদি সচেতন না হই, তাহলে পরিবেশ কখনোই রক্ষা করতে পারবো না।
আরও পড়ুনঃ জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৮শ ৭৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন:জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী
এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার, রুখবো মরুময়তা। অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা।’
আমার দেশ বাংলাদেশ, সবুজ শ্যামলে ভরা বাংলাদেশ যেন আস্তে আস্তে মরুভূমির দিকে পতিত হচ্ছে।বনায়ন কমে যাওয়ায় পৃথিবী হচ্ছে মরুভূমি, বাড়ছে তাপমাত্রা। জনজীবন বিপর্যস্ত করে ফেলেছে এই অতিরিক্ত উষ্ণতা ।
পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বৃক্ষ মানুষের প্রকৃত বন্ধু। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গাছ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করছে। কিন্তু আমরা সেই বৃক্ষ নিধন করছি প্রতিনিয়ত,গড়ে তুলছি নগরী। বসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের পরিবেশ দিন দিন প্রতিকূলে যাচ্ছে মানুষের। শহরের অধিকাংশ জায়গা দখল করে আছে ফাঁকা ছাদ, যা তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বেশ সহায়ক।
এমন পরিস্থিতিতে শহরগুলোতে বসবাসের উপযোগী করতে হলে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে মানবজীবনের সমৃদ্ধি লুকিয়ে আছে প্রাকৃতিক ব্যবস্থার ওপর। পরিবেশ দূষণ রোধ করতেই হবে- এই নীতিতে অটল থেকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশ সংরক্ষণে সমন্বিত কর্মকৌশল, সবুজ টেকসই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে শুধু আইন করলেই হবে না, পরিবেশ সুরক্ষায় নাগরিক সচেতনতাও জরুরি। দেশের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে। সবাই মিলে চেষ্টা করলে পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী রাখা সম্ভব।
লেখকঃ
মাহমুদুল হাসান,
ভেটেরিনারী অনুষদ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।