
ছোট বেলা থেকেই সে আঁকা আকি রঙ তুলির সাথে যুক্ত। সময় পেলেই রঙ তুলি নিয়া বসে যেতো। বিভিন্ন আর্ট কম্পিটিশনে বরাবরই ১ম/২য় হয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি আঁকা আকিতেই বেশি সময় ব্যয় করে সাথে সেলাই মেশিনের কাজটাও তার ময়ের থেকে রপ্ত করেছে।
তার দোকান থেকে নেওয়া কিছু কখনোই ভালো লাগে না সবসময় এক্সপেরিমেন্ট করে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করে, আমি শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মী শরিফুল গণি বলছি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী অনন্যা’র কথা।
এ কাজগুলো তাকে সবার থেকে ভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে। করোনাকালীন সময়ে ফেসবুকে অন্যদের কাজ দেখেই অনুপ্রেরণায় শাড়ি পাঞ্জাবিসহ বিভিন্ন পোশাকে হ্যান্ড পেইন্ট করা শুরু। তার ড্রইং শিক্ষক একটি বুটিক হাউজের ডিজাইনার হওয়া তার জন্য কাজটি আরো সহজ হয়ে যায়। তার থেকেই মুলত এই কাজ রপ্ত করা।
প্রথম দিকে বাড়ির সবার কাপড় নিয়ে কাজ করলেও কিছু দিন পরই তার শিক্ষকের এর অর্ডারের শাড়ি পাঞ্জাবি গুলোতে কাজ কারার মাধ্যমে এক বছরের মধ্যেই দক্ষ হয়ে ওঠে। কাজ শুরুর পর পরিচিতদের মধ্যে বেশি অর্ডার করলেও ধীরে ধীরে বাইরেও জনপ্রিয়তা লাভ করে।
একান্ত আলাপচারিতায় তিনি বলেন,’২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমি অফলাইনে কাজ করলেও বন্ধু-বান্ধবী এবং পরিবারের উৎসাহে মূলত অনলাইন পেইজ চালু করা। পরিবারের সবার সহযোগিতা শুরু থেকেই ছিলো, যার জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি। আমার মনে হয় আমার আরো কিছু শেখা দরকার।
প্রথমে আমি একটি পাঞ্জাবি দিয়ে শুরু করেছিলাম এখন আমার পেজে শাড়ি, পাঞ্জাবি, বিভিন্ন রকম হাতে বানানো গয়না, চুড়ি আরও বিভিন্ন কালেকশন রয়েছে। একদমই নতুন হিসাবে আমার পেজ থেকে আমি ভালো সারা পাচ্ছি। পেজ থেকে যতগুলো অর্ডার এসেছে আলহামদুলিল্লাহ সবার রিভিউ ভালো। আমার পেজটা মূলত কাস্টমাইজড বেইজড।
কাস্টমারদের চাওয়া অনুযায়ী আমি ডিজাইন করে থাকি। এমন অনেকেই আছেন আমার পেজে যারা কাপড় এবং ডিজাইনের ব্যাপারটা সম্পূর্ণই আমার উপর ছেড়ে দেন। আমার প্রতি তাদের এই বিশ্বাস ও ভরসার জায়গাটা আমি তৈরি করতে পেরেছি। এবং এইটাই আমাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা যোগায়। ভালো লাগে তখনই যখন দেখি কারোর স্পেশাল অকেশনে পরার পোশাকটি আমার হাতে বানানো।
আমার ইচ্ছা আছে আমার একটা বুটিক হাউজ থাকবে আড়ং এর মতো। এক জায়গাতে আমার হাতে বানানো সব কিছু পাওয়া যাবে। হাতে বানানো সব কিছুর দাম অনেক বেশি হয় যার কারণে ইচ্ছা থাকলেও সবার সাধ্য থাকে না। আমার ইচ্ছা আছে আমার ডিজাইন করা সব কিছু যাতে সবাই কম মূল্যে নিতে পারে সেই অনুযায়ী আমি কাজ করবো।
আমাদের দেশে এখন হ্যান্ড পেইন্ট শিল্পীদের অভাব নেই, তবে বেশিরভাগেরই কাজের ধারা একই রকম। এই কাজে আমি একটু ভিন্নতা আনার চেষ্টা করছি। যখন আমার মনে হবে যে আমি সবার থেকে ভিন্ন কিছু করতে পেরেছি তখন আমি এই কাজটা নিয়ে আরো বড় পরিসরে যাত্রা শুরু করবো।’
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য হস্ত শিল্পের উপর জোড় দেওয়া উচিৎ। সরকার এদের পাশে দাঁড়াতে বেকারত্ব দুর হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।