
মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন লিলি হল মোড় এলাকায় একটি সরকারি পুকুর(খাল) জবর দখলের চেষ্টায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত একদল সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার পাশাপাশি লুটপাট ও বাসায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ৬ এপ্রিল, রবিবার। সকালে সোবহান ও তার শ্যালক সাদ্দামকে খাল থেকে সরাতে তাদের বাসায় হামলা চালানো হয়। পরে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে আবারও হামলা চালানো হয়, যেখানে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়—আবু সাইদ, তাহাজুল (পিতা: মজিদ), মন্টু (পিতা: ভাদু ঘোষ), বাবু (পিতা: আজিজুল), মেরাজ (পিতা: বাবু), শরিফ (পিতা: বাবু), মিলন (পিতা: হাবিব), সম্রাট (পিতা: শুকুর) ও রফিকুল (পিতা: খোকা) দেশীয় অস্ত্র, হাসুয়া, রড, পাইপ ও পিস্তল নিয়ে সোবহানের বাসায় হামলা চালায়।
এ সময় ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী লুটপাট করা হয় এবং ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
এই হামলায় আহত হন—শুভহান (৩৬): মাথায় ২৪টি সেলাই, আসলাম (৬২): মাথায় ১০টি সেলাই, রবি (২৪): মাথায় ৮টি সেলাই, আনিকা বেগম (২৮): নাকে ৩টি সেলাই, রাশিদা বেগম (৫০) ও সাদ্দাম (৩৬): শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম। তারা বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীরা একসময় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেন্টুর অনুগত সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ছিল। তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জমি দখল ও চাঁদাবাজি করে আসছিল। গত ৫ আগস্টের পর কিছুদিন আত্মগোপনে থাকলেও সম্প্রতি তারা বিএনপির কিছু নেতার ছত্রছায়ায় আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ ফিলিস্তিনি গণহত্যা ও ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বীরগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল
জানা গেছে, সরকারি ওই খাল বা পুকুরটি নিয়ে সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিগত তিন বছর ধরে রাসেল, সাদ্দাম ও তাদের আত্মীয় সুবহান নিজ খরচে মাছ চাষ করে আসছিলেন। এই পুকুরটি দখলের লক্ষ্যেই ধারাবাহিকভাবে হয়রানি, ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও অভিযুক্ত মিজান ফোন ধরেননি। অপর অভিযুক্ত বাবু সিসিটিভি ফুটেজে তার উপস্থিতি সত্ত্বেও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, “হামলার খবর পাওয়ার পরই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তারা চিকিৎসা শেষে অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”